কি ভাবে সকালের মুমিন বিকালে কাফের হচ্ছে ? কায়সার আহমাদ
কি ভাবে সকালের মুমিন বিকালে কাফের হচ্ছে !?
কায়সার আহমাদ।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। তাওহীদের প্রধান এবং প্রথম উচ্চারণ। নাস্তিক থেকে আস্তিক হবার প্রথম কালেমা। ঈমানের ঘোষণা। ইসলামের সূচনা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিসের দাওয়াত দিচ্ছেন কাফিররা তা জিজ্ঞেস করত, তখন জবাব আসত, তিনি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'র দাওয়াত দিচ্ছেন। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এই মন্ত্রের দিকে আহ্বান করছেন।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- শুনা মাত্রই তখনকরা মানুষরা এর অর্থ, ব্যাখ্যা ও দাবী বুঝে গেলেন। যাদের হৃদয়ে হিদায়াতের নূর ছিল তারা ঈমান আনলেন। আর যাদের মনে কপটতা ছিল তারা প্রত্যাখ্যান করল।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- এর অর্থ কী??
''আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই'' এটাই কি শুধু এর অর্থ? একালের অমুসলিম এবং অধিকাংশ মুসলিমরা মনে করে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'র অর্থ এটাই।
ইলাহ'র অর্থ শুধু মাত্র উপাসনার সাথে সম্পৃক্ত, এটাই অধিকাংশরা ভাবে।
তাই এই যুগের অধিকাংশ মুসলিম আল্লাহর উপসনা করে কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে হাজারো কুফর এবং শিরকের মধ্যেই বসবাস করে। শুধু উপাসনার ক্ষেত্রে আল্লাহর নিকট উপস্থিত হয়। বাকি ক্ষেত্রে গায়রুল্লাহর নিকট প্রত্যাবর্তন করে।
ইলাহ'র অর্থের ব্যপকতা সেকালের মুসলিম এবং অমুসলিমরা বেশ ভালো করেই বুঝতে পেরেছিল। তারা বুঝে ছিল ইলাহ মেনে নেয়া মানে সব কিছু মেনে নেয়া।
আল্লাহর ৯৯ টি নাম বা সিফাত রয়েছে, সব গুলোই মেনে নেয়া। কোনো ইলাহ নেই তাঁর ছাড়া, কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো পালনকর্তা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো ত্রানকর্তা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো রিযকদাতা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো হুকুমকর্তা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো বিধানদাতা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো ভালবাসার পাত্র নেই তাঁর ছাড়া, কোনো মহান সত্ত্বা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো দু'আ কবুলকারী নেই তাঁর ছাড়া, কোনো সাহায্যকারী নেই তাঁর ছাড়া, কোনো মালিক ও অধিপতি নেই তাঁর ছাড়া......। তারা জানত লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ স্বীকার করার অর্থ হবে লা মাহবুবা ইল্লাল্লাহ, লা মাক্বসুদা ইল্লাল্লাহ, লা মাতলুবা ইল্লাল্লাহ। অর্থাৎ ভালোবাসার পাত্র, চরম ও চূড়ান্ত লক্ষ্য, ও প্রতিটি কাজের উদ্দেশ্য এক আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। এই অর্থ তারা ঠিক ঠিক বুঝত তাই কাফিররা রাগে ক্ষোভে ফুঁসে উঠত, যুদ্ধ ঘোষণা করত আর ম'মিনরা আল্লাহর নিকট সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে মুসলিম বলে বিবেচিত হত।
কিন্তু বর্তমান কালের মুসলিম ও অমুসলিম অধিকাংশই ভাবে কালেম তিনটি আসান শব্দের নাম। পড়ে নিলেই বা কি, মেনে নিলেই বা কি। সেকুলাররাও এই শব্দ উচ্চারণ করেছে, তাগুতরাও করেছে এবং ভাবছে তারা আসলেই মুসলিম। যে রাজত্ব ও প্রতাপ হারানোর ভয়ে ফিরাউন এটা উচ্চারণ থেকে বিরত ছিল, ঐ একই রাজত্ব ও প্রতাপ বজায় রেখে আজকের তাগুত শক্তিরা কালেমার শব্দ উচ্চারণ করে নিজেকে একজন আদর্শ মুসলিম ভাবছে। একই ভাবে মডারেটরা কালিমা পাঠ করে বিজ্ঞানসহ আধুনিক সভ্যতার ছায়ায় আশ্রয় নিয়ে গর্ববোধ করছে। একই ভাবে বিদ'আতিরা কবর মাজারের আশ্রয় নিয়েছে।
অর্থাৎ বুঝা গেল ফিরাউন, আবু জেহেল, আবু লাহাব, নমরুদ, উতবা, শাইবা-গণ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'র যে অর্থ বুঝে ছিল আজকের অধিকাংশ মুসলিমরাও সে অর্থ বুঝতে পারেনি।
কেউ দিন রাত এই শব্দের যিকর করছে অথচ এর বিপরিত হাজারো কাজ করছে। কেননা তারা আল্লাহকে কেবল মাত্র উপাস্য রূপেই জানছে। ব্যক্তি জীবনের ইবাদত কেন্দ্রীক বিষয় আশয়ে কেবল এই কালেমের ব্যপ্তি সীমাবদ্ধ মনে করছে। একই সাথে আল্লাহকে উপাস্য হিসেবে মেনে নেয়া এবং ফিরাউনিয়াতকে হুকুমদাতা হিসেবে মেনে নেয়াতে তারা কোনো সমস্যা মনে করছে না। আল্লাহকে এক মাত্র উপাসক হিসেবে মেনে নিলে সে যে খাজা বাবাকে ত্রানকর্তা হিসেবে মানতে পারবে না, এই কথা তারা বুঝে না। এই অর্থ না বুঝার কারণে অজান্তেই সকালের মু'মিনরা বিকালে কাফির হয়ে যাচ্ছে, আর বিকালের মু'মিনরা সকালে কাফির হচ্ছে।
إِنَّ صَلَاتِى وَنُسُكِى وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِى لِلَّهِ رَبِّ الْعٰلَمِينَ
কায়সার আহমাদ।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। তাওহীদের প্রধান এবং প্রথম উচ্চারণ। নাস্তিক থেকে আস্তিক হবার প্রথম কালেমা। ঈমানের ঘোষণা। ইসলামের সূচনা। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিসের দাওয়াত দিচ্ছেন কাফিররা তা জিজ্ঞেস করত, তখন জবাব আসত, তিনি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'র দাওয়াত দিচ্ছেন। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এই মন্ত্রের দিকে আহ্বান করছেন।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- শুনা মাত্রই তখনকরা মানুষরা এর অর্থ, ব্যাখ্যা ও দাবী বুঝে গেলেন। যাদের হৃদয়ে হিদায়াতের নূর ছিল তারা ঈমান আনলেন। আর যাদের মনে কপটতা ছিল তারা প্রত্যাখ্যান করল।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- এর অর্থ কী??
''আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই'' এটাই কি শুধু এর অর্থ? একালের অমুসলিম এবং অধিকাংশ মুসলিমরা মনে করে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'র অর্থ এটাই।
ইলাহ'র অর্থ শুধু মাত্র উপাসনার সাথে সম্পৃক্ত, এটাই অধিকাংশরা ভাবে।
তাই এই যুগের অধিকাংশ মুসলিম আল্লাহর উপসনা করে কিন্তু অন্যান্য ক্ষেত্রে হাজারো কুফর এবং শিরকের মধ্যেই বসবাস করে। শুধু উপাসনার ক্ষেত্রে আল্লাহর নিকট উপস্থিত হয়। বাকি ক্ষেত্রে গায়রুল্লাহর নিকট প্রত্যাবর্তন করে।
ইলাহ'র অর্থের ব্যপকতা সেকালের মুসলিম এবং অমুসলিমরা বেশ ভালো করেই বুঝতে পেরেছিল। তারা বুঝে ছিল ইলাহ মেনে নেয়া মানে সব কিছু মেনে নেয়া।
আল্লাহর ৯৯ টি নাম বা সিফাত রয়েছে, সব গুলোই মেনে নেয়া। কোনো ইলাহ নেই তাঁর ছাড়া, কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো পালনকর্তা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো ত্রানকর্তা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো রিযকদাতা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো হুকুমকর্তা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো বিধানদাতা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো ভালবাসার পাত্র নেই তাঁর ছাড়া, কোনো মহান সত্ত্বা নেই তাঁর ছাড়া, কোনো দু'আ কবুলকারী নেই তাঁর ছাড়া, কোনো সাহায্যকারী নেই তাঁর ছাড়া, কোনো মালিক ও অধিপতি নেই তাঁর ছাড়া......। তারা জানত লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ স্বীকার করার অর্থ হবে লা মাহবুবা ইল্লাল্লাহ, লা মাক্বসুদা ইল্লাল্লাহ, লা মাতলুবা ইল্লাল্লাহ। অর্থাৎ ভালোবাসার পাত্র, চরম ও চূড়ান্ত লক্ষ্য, ও প্রতিটি কাজের উদ্দেশ্য এক আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। এই অর্থ তারা ঠিক ঠিক বুঝত তাই কাফিররা রাগে ক্ষোভে ফুঁসে উঠত, যুদ্ধ ঘোষণা করত আর ম'মিনরা আল্লাহর নিকট সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করে মুসলিম বলে বিবেচিত হত।
কিন্তু বর্তমান কালের মুসলিম ও অমুসলিম অধিকাংশই ভাবে কালেম তিনটি আসান শব্দের নাম। পড়ে নিলেই বা কি, মেনে নিলেই বা কি। সেকুলাররাও এই শব্দ উচ্চারণ করেছে, তাগুতরাও করেছে এবং ভাবছে তারা আসলেই মুসলিম। যে রাজত্ব ও প্রতাপ হারানোর ভয়ে ফিরাউন এটা উচ্চারণ থেকে বিরত ছিল, ঐ একই রাজত্ব ও প্রতাপ বজায় রেখে আজকের তাগুত শক্তিরা কালেমার শব্দ উচ্চারণ করে নিজেকে একজন আদর্শ মুসলিম ভাবছে। একই ভাবে মডারেটরা কালিমা পাঠ করে বিজ্ঞানসহ আধুনিক সভ্যতার ছায়ায় আশ্রয় নিয়ে গর্ববোধ করছে। একই ভাবে বিদ'আতিরা কবর মাজারের আশ্রয় নিয়েছে।
অর্থাৎ বুঝা গেল ফিরাউন, আবু জেহেল, আবু লাহাব, নমরুদ, উতবা, শাইবা-গণ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'র যে অর্থ বুঝে ছিল আজকের অধিকাংশ মুসলিমরাও সে অর্থ বুঝতে পারেনি।
কেউ দিন রাত এই শব্দের যিকর করছে অথচ এর বিপরিত হাজারো কাজ করছে। কেননা তারা আল্লাহকে কেবল মাত্র উপাস্য রূপেই জানছে। ব্যক্তি জীবনের ইবাদত কেন্দ্রীক বিষয় আশয়ে কেবল এই কালেমের ব্যপ্তি সীমাবদ্ধ মনে করছে। একই সাথে আল্লাহকে উপাস্য হিসেবে মেনে নেয়া এবং ফিরাউনিয়াতকে হুকুমদাতা হিসেবে মেনে নেয়াতে তারা কোনো সমস্যা মনে করছে না। আল্লাহকে এক মাত্র উপাসক হিসেবে মেনে নিলে সে যে খাজা বাবাকে ত্রানকর্তা হিসেবে মানতে পারবে না, এই কথা তারা বুঝে না। এই অর্থ না বুঝার কারণে অজান্তেই সকালের মু'মিনরা বিকালে কাফির হয়ে যাচ্ছে, আর বিকালের মু'মিনরা সকালে কাফির হচ্ছে।
إِنَّ صَلَاتِى وَنُسُكِى وَمَحْيَاىَ وَمَمَاتِى لِلَّهِ رَبِّ الْعٰلَمِينَ
No comments