ভিন্ন ধর্মীয় ঐতিহাসিক হরবংশ মুখিয়ার চোখে মোগল সম্রাট বাবর
ভিন্ন ধর্মীয় ঐতিহাসিক হরবংশ মুখিয়ার চোখে মোগল সম্রাট বাবর।
আহমেদ রফিক বারকি।
জহিরুদ্দিন মুহম্মদ বাবর। ভারতীয় উপমহাদেশে পরাক্রমশালী মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি।
.
তিনি শুধু ঐতিহাসিক চরিত্র নন , আলোচিতও বটে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডে নামে নোংরা একটা দিন উদযাপন করা হয় । কিন্তু এই দিনটি যে এক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের জন্মদিনও বটে , সেটা খুব কম মানুষই জানেন।
.
১৪৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান উজবেকিস্তানের আন্দিজানে জন্ম হয়েছিল মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবরের। ভারতের একটা অংশের মানুষ সম্রাট বাবরকে আক্রমণকারী বলে মনে করে থাকেন। আর অযোধ্যায় তার নামাঙ্কিত বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি নিয়ে বহু দশক ধরে বিতর্ক চলছে।
.
আক্রমণকারী হোন অথবা বিজয়ী - কিন্তু বাবর সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছে খুব বেশি তথ্য নেই। মোগল সম্রাটদের মধ্যে আকবর বা শাহজাহানের নামই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়ে থাকে।
.
কিন্তু ইতিহাসবিদ হরবংশ মুখিয়ার কথায়, "সংস্কৃতি, সাহসিকতা আর সেনা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাবর নিঃসন্দেহে এক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যদি বাবর ভারতে না আসতেন, তাহলে এই দেশের সংস্কৃতি হয়তো এতটা বিচিত্র হওয়ার সুযোগ পেত না।"
.
ভাষা, সঙ্গীত, চিত্রকলা, স্থাপত্য, পোশাক অথবা খাবার-দাবার - প্রতিটা বিষয়েই মোগলদের অবদান অনস্বীকার্য বলে মনে করেন মুখিয়া। ১২ বছর বয়সে রাজ সিংহাসনে বসেছিলেন বাবর। হরবংশ মুখিয়ার মতে, বাবরের চিন্তাধারায় কখনো হার না মানার একটা মানসিকতা ছিল। তার মাথায় সমরখন্দ জয়ের স্বপ্ন ছিল।
.
তিনবার সমরখন্দ দখল করেছিলেন , কিন্তু প্রতিবারই ফিরে আসতে হয়েছিল তাকে। যদি তিনি সমরখন্দ দখলে সফল হতেন আর সেখানকার রাজা হিসেবেই থেকে যেতেন , তাহলে হয়তো কাবুল বা ভারত দখল করে রাজত্ব করার কথা তিনি ভাবতেনও না।
.
১৫২৬ সালে পানিপথের যুদ্ধে বিজয়ের বাবর সেখানে একটি মসজিদ বানিয়েছিলেন , যেটা আজও রয়েছে। মুখিয়ার মতে , সম্রাট বাবর হচ্ছেন পৃথিবীর প্রথম শাসক , যিনি নিজের আত্মজীবনী লিখেছিলেন। 'বাবরনামা'-তে তার জীবনের সাফল্য আর ব্যর্থতা - দুইয়ের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
.
তুর্কি ভাষায় কবিতা লিখতেন বাবর। বাবরনামায় ব্যবহৃত বেশ কিছু শব্দ এখন ভারতে প্রতিদিনের ভাষার অঙ্গ হয়ে গেছে। যেমন 'ময়দান' শব্দটা তার জীবনীতেই প্রথমবার দেখা যায়। সেভাবেই অনেক তুর্কি আর ফার্সি শব্দ ভারতীয়দের মুখের ভাষায় ঢুকে গেছে।
.
ইতিহাসবিদ মুখিয়ার মতে যুদ্ধ , সাম্রাজ্য পরিচালনার মধ্যেও নিজের পরিবারের প্রতি নিষ্ঠাবান ছিলেন বাবর। তার মা এবং নানির সঙ্গে যেমন গভীর সম্পর্ক ছিল , তেমনই বোনের কাছেও বাবর ছিলেন এক আদর্শ ভাই। আবার ছেলে হুমায়ূনের প্রতিও ছিল গভীর পিতৃস্নেহ।
.
হুমায়ূনের একবার কঠিন অসুখ হয়েছিল , সেই সময়ে বাবর ছেলের শরীর ছুঁয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন যে পুত্রের অসুখ সারিয়ে দিয়ে তিনি যেন বাবরের প্রাণ কেড়ে নেন , বলছিলেন মুখিয়া।
.
তিনি বলেন, " হুমায়ূন সে যাত্রা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন , কিন্তু ওই ঘটনার কিছুদিন পরেই বাবর অসুস্থ হয়ে পড়েন আর তারপরেই মৃত্যু হয় তার।" ৪৭ বছর বয়সে মৃত্যু পর্যন্ত লাগাতার যুদ্ধ করে গেছেন মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মুহম্মদ বাবর।
আহমেদ রফিক বারকি।
জহিরুদ্দিন মুহম্মদ বাবর। ভারতীয় উপমহাদেশে পরাক্রমশালী মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি।
.
তিনি শুধু ঐতিহাসিক চরিত্র নন , আলোচিতও বটে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনস ডে নামে নোংরা একটা দিন উদযাপন করা হয় । কিন্তু এই দিনটি যে এক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বের জন্মদিনও বটে , সেটা খুব কম মানুষই জানেন।
.
১৪৮৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান উজবেকিস্তানের আন্দিজানে জন্ম হয়েছিল মোগল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবরের। ভারতের একটা অংশের মানুষ সম্রাট বাবরকে আক্রমণকারী বলে মনে করে থাকেন। আর অযোধ্যায় তার নামাঙ্কিত বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি নিয়ে বহু দশক ধরে বিতর্ক চলছে।
.
আক্রমণকারী হোন অথবা বিজয়ী - কিন্তু বাবর সম্পর্কে সাধারণ মানুষের কাছে খুব বেশি তথ্য নেই। মোগল সম্রাটদের মধ্যে আকবর বা শাহজাহানের নামই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয়ে থাকে।
.
কিন্তু ইতিহাসবিদ হরবংশ মুখিয়ার কথায়, "সংস্কৃতি, সাহসিকতা আর সেনা পরিচালনার ক্ষেত্রে বাবর নিঃসন্দেহে এক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। যদি বাবর ভারতে না আসতেন, তাহলে এই দেশের সংস্কৃতি হয়তো এতটা বিচিত্র হওয়ার সুযোগ পেত না।"
.
ভাষা, সঙ্গীত, চিত্রকলা, স্থাপত্য, পোশাক অথবা খাবার-দাবার - প্রতিটা বিষয়েই মোগলদের অবদান অনস্বীকার্য বলে মনে করেন মুখিয়া। ১২ বছর বয়সে রাজ সিংহাসনে বসেছিলেন বাবর। হরবংশ মুখিয়ার মতে, বাবরের চিন্তাধারায় কখনো হার না মানার একটা মানসিকতা ছিল। তার মাথায় সমরখন্দ জয়ের স্বপ্ন ছিল।
.
তিনবার সমরখন্দ দখল করেছিলেন , কিন্তু প্রতিবারই ফিরে আসতে হয়েছিল তাকে। যদি তিনি সমরখন্দ দখলে সফল হতেন আর সেখানকার রাজা হিসেবেই থেকে যেতেন , তাহলে হয়তো কাবুল বা ভারত দখল করে রাজত্ব করার কথা তিনি ভাবতেনও না।
.
১৫২৬ সালে পানিপথের যুদ্ধে বিজয়ের বাবর সেখানে একটি মসজিদ বানিয়েছিলেন , যেটা আজও রয়েছে। মুখিয়ার মতে , সম্রাট বাবর হচ্ছেন পৃথিবীর প্রথম শাসক , যিনি নিজের আত্মজীবনী লিখেছিলেন। 'বাবরনামা'-তে তার জীবনের সাফল্য আর ব্যর্থতা - দুইয়ের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে।
.
তুর্কি ভাষায় কবিতা লিখতেন বাবর। বাবরনামায় ব্যবহৃত বেশ কিছু শব্দ এখন ভারতে প্রতিদিনের ভাষার অঙ্গ হয়ে গেছে। যেমন 'ময়দান' শব্দটা তার জীবনীতেই প্রথমবার দেখা যায়। সেভাবেই অনেক তুর্কি আর ফার্সি শব্দ ভারতীয়দের মুখের ভাষায় ঢুকে গেছে।
.
ইতিহাসবিদ মুখিয়ার মতে যুদ্ধ , সাম্রাজ্য পরিচালনার মধ্যেও নিজের পরিবারের প্রতি নিষ্ঠাবান ছিলেন বাবর। তার মা এবং নানির সঙ্গে যেমন গভীর সম্পর্ক ছিল , তেমনই বোনের কাছেও বাবর ছিলেন এক আদর্শ ভাই। আবার ছেলে হুমায়ূনের প্রতিও ছিল গভীর পিতৃস্নেহ।
.
হুমায়ূনের একবার কঠিন অসুখ হয়েছিল , সেই সময়ে বাবর ছেলের শরীর ছুঁয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেছিলেন যে পুত্রের অসুখ সারিয়ে দিয়ে তিনি যেন বাবরের প্রাণ কেড়ে নেন , বলছিলেন মুখিয়া।
.
তিনি বলেন, " হুমায়ূন সে যাত্রা সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন , কিন্তু ওই ঘটনার কিছুদিন পরেই বাবর অসুস্থ হয়ে পড়েন আর তারপরেই মৃত্যু হয় তার।" ৪৭ বছর বয়সে মৃত্যু পর্যন্ত লাগাতার যুদ্ধ করে গেছেন মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা জহিরুদ্দিন মুহম্মদ বাবর।
No comments